আইপি অ্যাড্রেস কি? What is IP Address?
আপনারা সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আইপি অ্যাড্রেস এর সম্পর্কে নিশ্চয় শুনেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, আইপি অ্যাড্রেস কি? এর প্রয়োজনীয়তা কি? এর আলাদা আলদা প্রকারভেদ গুলো কি কি? এই পোস্টে এসকল বিষয় নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এইসব মজাদার বিষয় নিয়ে তাড়াতাড়ি আলোচনা শুরু করা যাক।
একজন হ্যাকারের কাছে আইপি অ্যাড্রেস একটা গুরুত্তপূর্ণ জিনিস। তাকে তার নিজের আইপি লুকিয়ে রাখতে হয় পরিচয় গোপনের জন্য তেমনি অন্যদেরটা জানতে হয় হ্যাক করার জন্য।
আইপি অ্যাড্রেস (IP Address) হল Internet Protocol Address. এটি কিছু সংখ্যা দ্বারা তৈরি হয় এবং যেসকল ডিভাইস অনলাইনে যুক্ত তার প্রতিটির একটা আইপি আছে যা একটা আরেকটির সাথে মেলে না। প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস ইউনিক হয়। এবং আইপি অ্যাড্রেস দিয়েই এক সার্ভার আরেক সার্ভারে ডাটা ট্র্যান্সফার করে। আপনার পিসিকে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিসদাতা প্রতিষ্ঠান আইপি দিয়েই সনাক্ত করে।
আইপি অ্যাড্রেস মূলত দুইটি কাজ করে থাকে,
হোস্ট বা নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস খুঁজে বের করে, যাতে আপনি অন্য সার্ভারের সাথে কানেক্ট করতে পারেন।
নেটওয়ার্ক ব্যাবহারকারির অবস্থান চিহ্নিত করা। প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস একটা নির্দিষ্ট এলাকা বোঝায়। এলাকা ভেদে আইপি ভিন্ন হয়। আইপি অ্যাড্রেস মূলত বাইনারি (Binary) সংখ্যা। কিন্তু এটাকে আমরা কিছু সংখ্যা বা অক্ষরে দেখতে পাই।
নেটওয়ার্ক ব্যাবহারকারির অবস্থান চিহ্নিত করা। প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস একটা নির্দিষ্ট এলাকা বোঝায়। এলাকা ভেদে আইপি ভিন্ন হয়। আইপি অ্যাড্রেস মূলত বাইনারি (Binary) সংখ্যা। কিন্তু এটাকে আমরা কিছু সংখ্যা বা অক্ষরে দেখতে পাই।
আপনার আইপি অ্যাড্রেস জানতে চাইলে www.google.com এ গিয়ে IP Address লিখে এন্টার চাপুন, আপনার নিজের আইপি উপরে বড় করে লেখা দেখবেন।
একটি সাধারন আইপি অ্যাড্রেসের ভেতর চারটি সেকশন থাকে। এবং এর প্রত্যেকটি সেকশনে জিরো থেকে শুরু করে 255 পর্যন্ত লিমিট থাকে। এটি একটি ৩২ বিট নির্ভর অ্যাড্রেসিং সিস্টেম। এই অ্যাড্রেসের একটি উদাহারন হলো “202.18.32.103”। এটি প্রত্যেকের জন্য একটি করে ইউনিক অ্যাড্রেস থাকে। এবং এই সাধারন অ্যাড্রেসকে বলা হয় আইপিভি৪ (IPv4) অ্যাড্রেস। অর্থাৎ এটি ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেসের চতুর্থ নাম্বার সংস্করণ। কিন্তু এই আইপিভি৪ রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর তা হলো এই আইপিভি৪ কেবল মাত্র চার বিলিয়ন ইউনিক আইপি জেনারেট করতে পারে [আইপিভি৪ অ্যাড্রেস লিমিট “৪,২৯৪,৯৬৭,২৯৬]। আপনি যদি চার বিলিয়নের বেশি অ্যাড্রেস তৈরি করতে চান তবে আমার তা প্রথম থেকে জেনারেট হওয়া শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে বিষয় হলো ইউনিক অ্যাড্রেসের, কেনোনা প্রত্যেক জনের কাছে অবশ্যই আলদা আলদা অ্যাড্রেস থাকতে হবে। হয়তো যখন প্রথমবার এই আইপিভি৪ সিস্টেম বানানো হয়েছিলো তখন হয়তো এটা ধারনায় করা হয়নি যে বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এতোটা বেড়ে যাবে, বা এক এক ব্যাক্তির কাছে ৩-৪ টা ডিভাইজ থাকবে। তো সম্ভবত তারা ধারণা করতে পারেন নি যে, ঠিক আমাদের কত গুলো আইপি অ্যাড্রেসের প্রয়োজন পড়বে ভবিষ্যতে। আজকের দিনে আইপিভি৪ অ্যাড্রেস লিমিট চার বিলিয়ন যা একদম শেষ হয়ে গিয়েছে। এবং আমাদের কাছে নতুন অ্যাড্রেস একদমই নেই।
আর এজন্যই আমরা এক নতুন সিস্টেম উন্নতিকরণ করেছি, যার নাম হলো আইপিভি৬ (IPv6)। এটি ১২৮ বিট এর একটি অ্যাড্রেসিং সিস্টেম। এর একটি উদাহরণ হলোঃ “3ffe:1900:4545:3:200:f8ff:fe21:67cf”। এবং এই অ্যাড্রেসিং সিস্টেমের সাহায্যে আমরা মোটামুটি অগন্তি আলদা আলদা অ্যাড্রেস জেনারেট করতে পারবো [আমার গোনার ক্ষমতা নাই, তাই অগন্তি ]। আইপিভি৬ দিয়ে “৩৪০,২৮২,৩৬৬,৯২০,৯৩৮,৪৬৩,৪৬৩,৩৭৪,৬০৭,৪৩১,৭৬৮,২১১,৪৫৬” টি ইউনিক অ্যাড্রেস জেনারেট করা সম্ভব। অর্থাৎ চিন্তা করতে পারছেন, এই সিস্টেমের মাধ্যমে প্রত্যেকটি মানুষের কাছে যদি কয়েক লাখ ডিভাইজও থাকে তবেও ইউনিক অ্যাড্রেস ব্যবহার করে শেষ করা সম্ভব হবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আজকের দিনেও আমরা আইপিভি৬ ব্যবহার করি না, আমরা শুধু মাত্র আইপিভি৪ ব্যবহার করে থাকি। কেনোনা আইপিভি৬ ব্যবহার করার জন্য আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার, আপনার মোডেম বা রাউটার এবং ওয়েবসাইট হোস্টিং সার্ভার গুলোকেও একসাথে আইপিভি৬ ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা পড়ে। এবং আমরা আজ পর্যন্ত আইপিভি৬ ব্যবহার করি না।
পুরো দুনিয়াতে ১% এর ও কম আইপিভি৬ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া আমরা সবাই আইপিভি৪ ব্যবহার করে থাকি। আপনার জ্ঞানের জন্য বলে রাখি, আইপিভি৬ যে শুধু একটি আলাদা অ্যাড্রেসিং ফরম্যাট তা কিন্তু নয়। আপনার ডাটার যে প্যাকেট গুলো থাকে এবং আপনার ডাটা গুলো যে ফরম্যাটে থাকে, যে হেডার ফরম্যাট থাকে, প্যাকেটের যে সাইজ থাকে সেগুলোও আইপিভি৪ এর তুলনায় আইপিভি৬ এ বেশি দক্ষ হয়। এবং আপনার ইন্টারনেট পারফর্মেন্স বাড়াতেও আইপিভি৬ সাহায্য করে থাকে। এখন এটা দেখার বিষয় যে ঠিক কবে থেকে আমরা এই অ্যাড্রেসিং সিস্টেম অর্থাৎ আইপিভি৬ ব্যবহার করা শুরু করি
Comments
Post a Comment